সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন
রুহুল আমীন খন্দকার- বিশেষ প্রতিনিধিঃ
দেশ ও জাতির কল্যানার্থে বিরতিহীন অভিযানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস, অস্ত্র ও জঙ্গিবাদ নির্মূল’সহ দেশের সার্বিক শান্তি শৃঙ্খলা বজায়ের মলক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট। এই ধারাবাহিকতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে সারা দেশব্যাপী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কতৃক যথারীতি অভিযান চলমান রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় যশোরে বহুল আলোচিত দুটি ক্লুলেস হত্যা মামলার কারণ উদ্ঘাটন করতে গিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিন চরমপন্থী নেতাকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন পটুয়াখালী জেলা সদরের পুরান বাজার এলাকার নারায়ণ চন্দ্র সাহার ছেলে বাসুদেব সাহা ওরফে তিল্লক ওরফে কিরণ ওরফে তপন ওরফে বাদল ওরফে মাহমুদুর রহমান(৩৯), যশোরের অভয়নগর উপজেলার রামসরা এলাকার নিখিল মণ্ডলের ছেলে দিপঙ্কর মণ্ডল (৩৩) এবং পঞ্চরাম মণ্ডলের ছেলে কৃষ্ণপদ মণ্ডল (৭০)। তারা সবাই চরমপন্থী সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য বলে পুলিশের দাবি।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইন্সপেক্টর রুপন কুমার সরকারের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২১ইং সালের ১৯শে নভেম্বর যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর এলাকার মাছের ঘেরের মধ্যে প্রকাশ মল্লিক ওরফে ব্রিটিশ নামে এক চরমপন্থী সদস্যকে খুন করা হয়। আর চলতি বছরের ১০ই জানুয়ারী অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক নম্বর ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত মেম্বর উত্তম সরকারকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করে। এই দুটি খুনে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়।
যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার দ্রুত সময়ে রহস্য উদঘাটনের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি)মামলা দুটি তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলা দুটি তদন্তকালে ইতোপূর্বে চরমপন্থী সংগঠনের ১২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে ডিবি। উদ্ধার করা হয় অবৈধ অস্ত্র। তাদের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্তে পৃথক ৪-টি মামলা হয়।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে- আসামিরা চরমপন্থী সংগঠন নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির পরিচয় দিয়ে অভয়নগর ও মনিরামপুর এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়নের মেম্বর এবং বিত্তশালীদের ফোন করে চাঁদা চেয়ে না পেয়ে হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টি করে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউপি সদস্য উত্তম সরকার ও তাদের দলীয় সদস্য প্রকাশ মল্লিককে হত্যা করে। কথিত চরমপন্থী সংগঠনের নেতা কিরণ ওরফে বাদল ওরফে কিশোর ওরফে মাহমুদুর রহমান তপন রয়ে যায় ঠিকানাবিহীন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, যশোর ডিবির এসআই শামীম হোসেন তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক ছদ্মনামধারী কিরণকে গ্রেফতারের জন্য ১৯শে এপ্রিল ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী এলাকায় অভিযান চালান। সর্বশেষ মাদারীপুর জেলার সদর থানা এলাকা থেকে ২২ এপ্রিল কিরণকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে দুটি হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলেও গণমাধ্যম কর্মীদের জানান ইন্সপেক্টর রুপন কুমার সরকার।